আজকের সেহরির শেষ সময় রাজশাহী | ইফতারের সময়সূচি
আজকের সেহরির শেষ সময় রাজশাহী ও ইফতারের সময়সূচি - প্রত্যেক রোজাদারের জন্য
আজকের সেহরির শেষ সময় জানা জরুরি। কারণ সুবহে সাদিকের পর সেহরি গ্রহণ করলে রোজা
ভঙ্গ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই নির্ভুল সময় মেনে রোজা রাখুন এবং রমজানের পূর্ণ
বরকত অর্জন করুন। আজ ইফতারের সময় রাজশাহী সম্পর্কে জানতে বিস্তারিত পড়ুন।
আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তির অন্যতম সহজ পথ হলো সঠিক
নিয়ম মেনে রমজানের রোজা রাখা। আজকের সেহরির শেষ সময় ও ইফতারের সময়সূচি
সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখনই পড়ুন।
পেজ সূচিপত্রঃ আজকের সেহরির শেষ সময় রাজশাহী ও ইফতারের সময়সূচি
- আজকের সেহরির শেষ সময় রাজশাহী ও ইফতারের সময়সূচি
- রাজশাহী সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি
- রোজার নিয়ত করা
- ইফতারের দোয়া
- রোজা ভঙ্গের ১০টি কারণ
- ইফতারের আগে দোয়া কবুলের হাদিস
- রমজান মাসের ফজিলত
- ইফতারের সময় আমাদের করণীয়
- ইফতারের সময় বর্জনীয় কাজ
- আমাদের শেষ কথা
আজকের সেহরির শেষ সময় রাজশাহী ও ইফতারের সময়সূচি
আজকের সেহরির শেষ সময় রাজশাহী ও ইফতারের সময়সূচি - সুবহে সাদিকের পূর্বে সেহরি সম্পন্ন করা রোজার অন্যতম শর্ত, কারণ এর পর
খাদ্য গ্রহণ করলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই আমাদের প্রত্যেক
রোজাদারের উচিত নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সেহরি শেষ করা, যাতে ইবাদত-বন্দেগি
সঠিকভাবে পালন করা যায় এবং আল্লাহর রহমত লাভ করা সম্ভব হয়।
দিনের দীর্ঘ সময় উপবাসের পর ইফতারের মুহূর্ত আমরা যারা রোজাদার তাদের জন্য এক
বিশেষ আনন্দের সময়। এ সময়ে রোজা
ভঙ্গ করা সুন্নাত, এবং নবিজি (সা.) তাড়াতাড়ি ইফতার করার উপদেশ দিয়েছেন।
ইফতারের সময় দোয়া কবুল হয়, তাই এই পবিত্র মুহূর্তে আল্লাহর নিকট দোয়া করে
তাঁর রহমত ও মাগফিরাত প্রার্থনা করা প্রত্যেক মুমিনের কর্তব্য।
রাজশাহী সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি
আজকের সেহরির শেষ সময় রাজশাহী ও ইফতারের সময়সূচি নিয়ে আলোচনা করব। বাংলাদেশে বিভিন্ন জেলা
থাকলেও, রাজশাহী জেলা অন্যতম এবং এর রয়েছে অনেক গুণ এবং খ্যাতি। সৌন্দর্য ও
প্রাকৃতিক শোভায় রাজশাহী জেলা বাংলাদেশের সেরা জেলার মধ্যে অন্যতম। যদি আপনি
রাজশাহী জেলায় বসবাস করেন, তাহলে রমজান মাসের সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি সম্পর্কে
জেনে নিন।
রমজান | তারিখ | বার | সেহরি | ইফতার |
---|---|---|---|---|
১ | ০২-০৩-২০২৫ | রবিবার | ০৫ঃ০৬ | ০৬ঃ১১ |
২ | ০৩-০৩-২০২৫ | সোমবার | ০৫ঃ০৬ | ০৬ঃ১২ |
৩ | ০৪-০৩-২০২৫ | মঙ্গলবার | ০৫ঃ০৫ | ০৬ঃ১২ |
৪ | ০৫-০৩-২০২৫ | বুধবার | ০৫ঃ০৪ | ০৬ঃ১২ |
৫ | ০৬-০৩-২০২৫ | বৃহস্পতিবার | ০৫ঃ০৩ | ০৬ঃ১৩ |
৬ | ০৭-০৩-২০২৫ | শুক্রবার | ০৫ঃ০২ | ০৬ঃ১৩ |
৭ | ০৮-০৩-২০২৫ | শনিবার | ০৫ঃ০১ | ০৬ঃ১৪ |
৮ | ০৯-০৩-২০২৫ | রবিবার | ০৫ঃ০০ | ০৬ঃ১৪ |
৯ | ১০-০৩-২০২৫ | সোমবার | ০৪ঃ৫৯ | ০৬ঃ১৫ |
১০ | ১১-০৩-২০২৫ | মঙ্গলবার | ০৪ঃ৫৮ | ০৬ঃ১৫ |
রমজান | তারিখ | বার | সেহরি | ইফতার |
---|---|---|---|---|
১১ | ১২-০৩-২০২৫ | বুধবার | ০৪ঃ৫৭ | ০৬ঃ১৬ |
১২ | ১৩-০৩-২০২৫ | বৃহস্পতিবার | ০৪ঃ৫৬ | ০৬ঃ১৬ |
১৩ | ১৪-০৩-২০২৫ | শুক্রবার | ০৪ঃ৫৫ | ০৬ঃ১৭ |
১৪ | ১৫-০৩-২০২৫ | শনিবার | ০৪ঃ৫৪ | ০৬ঃ১৭ |
১৫ | ১৬-০৩-২০২৫ | রবিবার | ০৪ঃ৫৩ | ০৬ঃ১৮ |
১৬ | ১৭-০৩-২০২৫ | সোমবার | ০৪ঃ৫২ | ০৬ঃ১৮ |
১৭ | ১৮-০৩-২০২৫ | মঙ্গলবার | ০৪ঃ৫১ | ০৬ঃ১৮ |
১৮ | ১৯-০৩-২০২৫ | বুধবার | ০৪ঃ৫০ | ০৬ঃ১৯ |
১৯ | ২০-০৩-২০২৫ | বৃহস্পতিবার | ০৪ঃ৪৯ | ০৬ঃ১৯ |
২০ | ২১-০৩-২০২৫ | শুক্রবার | ০৪ঃ৪৮ | ০৬ঃ১ |
রমজান | তারিখ | বার | সেহরি | ইফতার |
---|---|---|---|---|
২১ | ২২-০৩-২০২৫ | শনিবার | ০৪ঃ৪৭ | ০৬ঃ২০ |
২২ | ২৩-০৩-২০২৫ | রবিবার | ০৪ঃ৪৬ | ০৬ঃ২০ |
২৩ | ২৪-০৩-২০২৫ | সোমবার | ০৪ঃ৪৫ | ০৬ঃ২০ |
২৪ | ২৫-০৩-২০২৫ | মঙ্গলবার | ০৪ঃ৪৪ | ০৬ঃ২১ |
২৫ | ২৬-০৩-২০২৫ | বুধবার | ০৪ঃ৪২ | ০৬ঃ২১ |
২৬ | ২৭-০৩-২০২৫ | বৃহস্পতিবার | ০৪ঃ৪১ | ০৬ঃ২২ |
২৭ | ২৮-০৩-২০২৫ | শুক্রবার | ০৪ঃ৪০ | ০৬ঃ২২ |
২৮ | ২৯-০৩-২০২৫ | শনিবার | ০৪ঃ৩৯ | ০৬ঃ২৩ |
২৯ | ৩০-০৩-২০২৫ | রবিবার | ০৪ঃ৩৭ | ০৬ঃ২৩ |
৩০ | ৩১-০৩-২০২৫ | সোমবার | ০৪ঃ৩৬ | ০৬ঃ২৪ |
আরো পড়ুনঃ
রোজার নিয়ত করা
রমজান মাস রোজার নিয়ত করা মুসলমানদের জন্য এক বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ সময়। এই মাসে আমাদের সকল
কার্যকলাপ শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য হওয়া উচিত। রোজা রাখা
শুধুমাত্র খাদ্য ও পানীয় থেকে বিরত থাকা নয়, বরং এটি এক আত্মিক প্রশিক্ষণ এবং
ইবাদত। আর রোজা রাখার পূর্বে নিয়ত করা অত্যন্ত জরুরি।
রোজার নিয়ত এক ধরনের আত্মসমর্পণ এবং আল্লাহর প্রতি নিষ্ঠা প্রকাশের মাধ্যম।
আমাদের শরীর ও মন দুইটাই এই নিয়ত দ্বারা প্রস্তুত হয়, যাতে আমরা আল্লাহর পথে চলতে
পারি। যদি নিয়ত না করা হয়, তবে রোজা খারাপ হতে পারে। রোজার নিয়ত একটি সুস্পষ্ট
উদ্দেশ্য দেয় - আমরা ১ম রোজা থেকে শেষ রোজা পর্যন্ত শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য
দৌড়াবো।
রোজার নিয়ত কিভাবে করবেন?
রমজান মাসে প্রতিটি রোজা রাখার জন্য নিয়ত করতে হবে। তবে এটি মনে রাখা জরুরি যে,
নিয়তটি একেবারে আন্তরিকভাবে এবং পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে করতে হবে। রোজার নিয়ত
নিম্নরূপ হতে পারেঃ
"আমি আল্লাহর জন্য আগামীকাল দিনের রোজা রাখতে নিয়ত করছি, আল্লাহ আমার এই রোজা
কবুল করুন।"
এটি মুখে বলার পাশাপাশি অন্তরে ঠিকভাবে বিশ্বাস করতে হবে। নিয়তটি অবশ্যই রমজান
মাসের শুরু থেকেই নিয়মিত করতে হবে।
রোজার নিয়ত করার সময় কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়
- ইসলামিক দৃষ্টিকোণ - নিয়ত করার সময় এটি মনে রাখতে হবে যে, এই রোজা একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে।
- দৃঢ় বিশ্বাস - নিয়ত যেন আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস এবং ভালবাসা থেকে আসে। রোজা আল্লাহর জন্য, তাঁর ইবাদত এবং প্রশংসা করার জন্য।
- সচেতনতা - দিনের শুরুতে, সেহরি খাওয়ার পর এবং সূর্যাস্তের আগে এই নিয়ত অবশ্যই করে নিতে হবে।
রমজান মাসের রোজার নিয়ত কেবল একটি ধর্মীয় কর্তব্য নয়, এটি আমাদের আত্মিক
উন্নতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যখন আমরা রোজা রাখি, তখন শুধু শরীরিকভাবে
খাওয়া-দাওয়া থেকে বিরত থাকি না, বরং আমাদের মন, ভাষা, এবং চিন্তা-ভাবনাও
আল্লাহর পথে পরিচালিত হয়।
আত্মবিশ্বাসী এবং শান্তিপূর্ণ মনোভাব তৈরি হয়, যখন আমরা আল্লাহর জন্য নিজেদের
ইবাদত সম্পাদন করি। রোজার নিয়ত আমাদের জীবনের এক বিশেষ মুহূর্তে আল্লাহর কাছে
আত্মসমর্পণ করে, এবং এই নিয়ত আমাদের পাথেয় হয়ে ওঠে জীবনের নানান চ্যালেঞ্জ
মোকাবেলা করার জন্য।
ইফতারের দোয়া
রমজান মাসে সারাদিনের উপবাস শেষে ইফতারের সময়টি মুসলিমদের জন্য এক বিশেষ মুহূর্ত।
দিনের তীব্র রোজা ভাঙতে, আল্লাহর অশেষ রহমত ও দয়া কামনা করতে ইফতারের সময় দোয়া
পড়ার গুরুত্ব অনেক। এখানে, আমরা ইফতারের দোয়া নিয়ে একটি সুন্দর এবং আকর্ষণীয় ব্লগ
পোস্ট শেয়ার করছি, যা আপনার ইফতারকে আরো বেশি পূর্ণতা ও বরকত এনে দিবে।
ইফতার করার সময় আল্লাহর প্রতি শুকরিয়া আদায় করা এবং তাঁর কাছে ভালো ও মঙ্গলময়
জীবন কামনা করা একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। রাসুল (সা.) বলেছেন, "রোজাদারের জন্য
যখন সে ইফতার করে, তখন তার দোয়া মঞ্জুর হয়।" (ইবনে মাজাহ) তাই, ইফতারের সময় দোয়া
করা আমাদের ঈমান ও তাওয়াক্কুলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ইফতারের দোয়া
ইফতারের জন্য একটি বিশেষ দোয়া রয়েছে, যা আমরা প্রতিদিন ইফতার করার সময় পাঠ করতে
পারি। দোয়া হলোঃ
اللهم إني لك صمت، وبك آمنت، وعليك توكلت، وبك افطرت
"অল্লাহুম্মা ইন্নি লাকা ছুমতু, ওয়া বিকা আমান্তু, ওয়া আলাইক তাওয়াক্কালতু, ওয়া
বিকা আফতারতু।"
অর্থঃ "হে আল্লাহ, আমি তোমার জন্য রোজা রেখেছি, তোমার উপর বিশ্বাস স্থাপন করেছি,
তোমার উপর ভরসা রেখেছি, এবং তোমার দিয়েই ইফতার করছি।"
এটি শুধু দোয়া নয়, এটি আমাদের হৃদয়ে আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা এবং একাগ্রতা
প্রকাশের একটি সুন্দর উপায়।
ইফতার এবং পরিবার
ইফতারের সময়টিতে পরিবারের সবাই একত্রে বসে খাওয়া দাওয়া করা, ভালো সময় কাটানো এবং
দোয়া পাঠ করা আমাদের পারিবারিক বন্ধন শক্তিশালী করে। ছোটদেরকে দোয়া শেখানো, তাদের
সঙ্গে ইফতার করা ও তাদের জন্য মঙ্গল কামনা করা রমজানের সুন্দর অভিজ্ঞতা হয়ে ওঠে।
ইফতার পরবর্তী দোয়া
আজকের সেহরির শেষ সময় রাজশাহী ও ইফতারের সময়সূচি - অনুযায় ইফতার করার পর আমাদের উচিত আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করা এবং তাঁর কাছে আরো
বরকত, রহমত ও ক্ষমা প্রার্থনা করা। আমরা দোয়া করতে পারিঃ
اللهم تقبل منا صيامنا وقيامنا، واغفر لنا ما تقدم من ذنبنا وما تأخر
"অল্লাহুম্মা তাকাব্বাল منا সিয়ামানা ওয়া কিয়ামানা, ওয়া ঘাফির লানা মা তাকাদ্দামা
মিন জান্বিনা ওয়া মা তাখখার।"
অর্থঃ "হে আল্লাহ, আমাদের সিয়াম ও কিয়াম কবুল করুন, আমাদের অতীত ও ভবিষ্যত
গুনাহগুলো ক্ষমা করুন।"
রমজান মাস হচ্ছে আমাদের আত্মিক উন্নতি এবং আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের সেরা সময়।
ইফতার সময়ের দোয়া শুধুমাত্র শরীরিক উপবাস ভাঙার সময় নয়, বরং এটি আমাদের মনের এবং
আত্মার শান্তির এক বিশেষ সময়। তাই, প্রতিটি দোয়া আল্লাহর কাছে আন্তরিক আবেদন হওয়া
উচিত, যাতে তিনি আমাদের সব দোয়া কবুল করেন এবং আমাদের জীবনকে আনন্দময় ও বরকতময়
করে দেন।
রোজা ভঙ্গের ১০টি কারণ
রোজা ভঙ্গের কারণগুলো সাধারণত ইসলামী শরিয়া অনুসারে নির্দিষ্ট কিছু কার্যক্রমের
মাধ্যমে ঘটে। রোজা ভঙ্গের জন্য যে কারণগুলো দায়ী হতে পারে, তা বিস্তারিত জানতে
নিচে পড়ুন।
- খাওয়া বা পান করা - রোজা অবস্থায় যদি কিছু খাওয়া বা পান করা হয়, তবে রোজা ভঙ্গ হয়ে যায়। খাবার বা পানীয় গ্রহণ করাও রোজা ভঙ্গের অন্যতম কারণ।
- যৌন সম্পর্ক - রোজার সময় যদি কেউ যৌন সম্পর্ক স্থাপন করে, তবে এটি রোজা ভঙ্গের অন্যতম কারণ। তবে, যদি সম্পর্ক না হয় তবে রোজা ভঙ্গ হয় না।
- বিভিন্ন ধরনের ইন্দ্রিয় ভোগ - কোনো ধরনের ইন্দ্রিয় ভোগ, যেমন গন্ধ শোঁকা (যদি তা খাওয়া বা পানীয়ের মতো হয়), রোজা ভঙ্গের কারণ হতে পারে।
- মদ্যপান বা মাদক সেবন - মদ্যপান বা কোনো ধরনের মাদক সেবন রোজা ভঙ্গের কারণ হয়ে থাকে। এটি ইসলামে হারাম এবং রোজা ভঙ্গের গুরুতর অপরাধ।
- বমি - যদি কেউ নিজের ইচ্ছায় বমি করে এবং তা প্রচুর হয়, তবে রোজা ভঙ্গ হয়ে যায়। তবে, স্বাভাবিকভাবে বমি হলে রোজা ভঙ্গ হয় না।
- মেয়েদের মাসিক বা শিশুর জন্মের সময় - রোজা অবস্থায় যদি কোনো মহিলা মাসিক (হায়েজ) বা নফসাম (লেবার) অবস্থায় থাকে, তবে তার রোজা ভঙ্গ হয়ে যায়।
- ইচ্ছাকৃতভাবে বীর্যপাত - ইচ্ছাকৃতভাবে বীর্যপাত হলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যায়। এটি যৌন সম্পর্ক, সঙ্গম, বা মগ্নমনে অন্য কোনো কারণে ঘটতে পারে।
- রোজা অবস্থায় নেশাগ্রস্ত হওয়া - কোনো ধরনের নেশাগ্রস্ত হওয়া (যেমন মাদক, মদ) রোজা ভঙ্গের অন্যতম কারণ।
- রোজার উদ্দেশ্য ভুলে কিছু খাওয়া বা পান করা - রোজা ভঙ্গ হওয়ার আরেকটি কারণ হল, রোজার উদ্দেশ্য ভুলে খাবার বা পানীয় গ্রহণ করা।
- বৃদ্ধ বয়সে শারীরিক অক্ষমতা - যদি কেউ বৃদ্ধ বয়সের কারণে অথবা শারীরিক কোনো অসুস্থতার কারণে রোজা রাখতে অক্ষম হন, তবে তার রোজা ভঙ্গ হতে পারে।
এগুলো হলো রোজা ভঙ্গের কিছু প্রধান কারণ। রোজা রাখতে চাইলে এই সব বিষয়গুলো থেকে
বিরত থাকতে হবে।
ইফতারের আগে দোয়া কবুলের হাদিস
আজকের সেহরির শেষ সময় রাজশাহী ও ইফতারের সময়সূচি - ইফতারের সময় দোয়া কবুল হওয়ার বিষয়ে রাসুল (সা.) এর একটি হাদিস রয়েছে। হাদিসটি
খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং ইফতারের সময় আমাদের দোয়া আল্লাহর কাছে মঞ্জুর হওয়ার আশা
বাড়িয়ে দেয়। হাদিসটিঃ
حديث
قال رسول الله صلى الله عليه وسلم:
"لِلصَّائِمِ عِندَ فِطْرِهِ دَعْوَةٌ مَا تُرَدُّ"
(رواه الترمذي)
অর্থঃ
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেনঃ "রোজাদারের জন্য তার ইফতারের সময় এমন একটি দোয়া রয়েছে,
যা কখনোই প্রত্যাখ্যাত হয় না।"
(তিরমিজি)
এখানে রাসুল (সা.) আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন যে, ইফতার করার সময় রোজাদারের দোয়া
আল্লাহর কাছে মঞ্জুর হয়। এই হাদিসটি আমাদেরকে ইফতারের সময় দোয়া করার গুরুত্ব
বুঝায় এবং আশা দেয় যে, আমাদের মঙ্গলকামী দোয়া আল্লাহর কাছে কবুল হবে।
আমরা যখন ইফতার করি, তখন আমাদের উচিত এই দোয়া আল্লাহর কাছে আন্তরিকভাবে করতে, যেন
আল্লাহ আমাদের দোয়া কবুল করে আমাদের সমস্ত পাপ ক্ষমা করেন এবং আমাদের জীবনকে
বরকতপূর্ণ করেন।
রমজান মাসের ফজিলত
রমজান মাস ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাস, যা সারা বিশ্বে মুসলিমদের জন্য রহমত,
বরকত এবং ক্ষমার মাস হিসেবে পরিচিত। এই মাসে আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের জন্য
বিশেষ দয়া বর্ষণ করেন। রমজান মাসে সিয়াম (রোজা) রাখা ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের
অন্যতম একটি ইবাদত, যা মুসলমানদের আত্মশুদ্ধি, ধৈর্য ও পরিশুদ্ধতা অর্জনে সহায়ক।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "রমজান মাস তোমাদের জন্য এক আশীর্বাদ।" (তিরমিজি) এই
মাসে রাতের নফল ইবাদত, দান-খয়রাত, দোয়া এবং তিলাওয়াতের মাধ্যমে মুমিনরা আল্লাহর
সান্নিধ্য লাভের প্রচেষ্টা করে থাকে।
রমজান মাসের মধ্যে রয়েছে লাইলাতুল কদর, যেটি এক হাজার মাসের চেয়েও উত্তম, যার
মাধ্যমে মুসলমানরা আল্লাহর বিশেষ রহমত ও ক্ষমা লাভের সুযোগ পায়। এই মাসে শয়তানকে
বন্দী করা হয়, ফলে মানুষের ইবাদত ও সৎ কাজের প্রতি মনোযোগ বৃদ্ধি পায়। রোজা রাখার
মাধ্যমে শুধু শারীরিক নয়, আত্মিক পবিত্রতাও অর্জিত হয়, যা মুসলমানদের ঈমানি শক্তি
ও আধ্যাত্মিক উন্নতি নিশ্চিত করে। রমজান মাস আসলে আল্লাহর রহমত লাভের এক সুবর্ণ
সুযোগ এবং মুসলমানদের জন্য আত্ম-নিরীক্ষণ ও তাওবা করার সময়।
ইফতারের সময় আমাদের করণীয়
ইফতারের সময় আমাদের উচিত আল্লাহর কাছে দোয়া করা এবং বিসমিল্লাহ বলে ইফতার করা। পাশাপাশি, দরিদ্র ও অসহায়দের কথা মনে রেখে তাদের সাহায্য করা। ইফতারের সময় আমাদের করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত পড়ুন-
- ইফতার করার আগে দোয়া পড়া - ইফতার করার আগে রাসুল (সা.) এর শিখানো দোয়া পড়া উচিতঃ اللهم إني لك صمت، وبك آمنت، وعليك توكلت، وبك افطرت
- খুব ধীরেসুস্থে ইফতার করা - দ্রুত না খেয়ে ধীরে ধীরে পানি বা খেজুর দিয়ে ইফতার শুরু করা উত্তম।
- পানি পান করা - এক গ্লাস পানি পান করুন, যাতে শরীর আর্দ্র থাকে এবং দেহের পানির ঘাটতি পূর্ণ হয়।
- খেজুর দিয়ে ইফতার করা - রাসুল (সা.) এর সুন্নত অনুসরণ করে খেজুর দিয়ে ইফতার শুরু করা উচিত।
- সুন্নত অনুসরণ করা - সুন্নত অনুসারে প্রথমে পানি বা খেজুর দিয়ে ইফতার করা, এরপর সালাত পড়া এবং পরে হালকা খাবার গ্রহণ করা।
- নফল নামাজ (মাগরিব নামাজ) পড়া - ইফতার করার পর মাগরিবের নামাজ আদায় করা।
- অতিরিক্ত খাবার না খাওয়াঅতিরিক্ত খাবার গ্রহণ না করে পরিমিত খাবার খাওয়া উচিত যাতে শরীর সুস্থ থাকে।
- অন্যদের সঙ্গে ইফতার করা - রিবারের সদস্যদের বা অন্য মুসলিমদের সঙ্গে মিলিত হয়ে ইফতার করা।
- দোয়া ও তাওবা করা - ইফতার করার পর আল্লাহর কাছে দোয়া করা এবং পূর্বের গুনাহের জন্য তাওবা করা।
- আল্লাহর প্রতি শোকরিয়া আদায় করা - ইফতারের মাধ্যমে আল্লাহর অশেষ দয়া ও রহমত পাওয়ার জন্য তাঁর কাছে শুকরিয়া আদায় করা।
ইফতারের সময় বর্জনীয় কাজ
ইফতারের সময় কিছু কাজ রয়েছে যা মুসলিমদের পরিহার করা উচিত, কারণ তা রোজার
সঠিকতা ও পূর্ণতা নষ্ট করতে পারে। প্রথমত, "অতিরিক্ত খাবার খাওয়া" একটি বড়
ভুল। রোজা ভাঙার সময় যদি বেশি খাওয়া হয়, তবে তা শরীরকে ভারী করে দেয় এবং
হজমের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। কিছু লোক মনে করেন, সারাদিন না খেয়ে ইফতার
করলে খেতে অনেক কিছুই ইচ্ছা করবে, কিন্তু অতিরিক্ত খাওয়া শুধু শরীরের জন্যই
ক্ষতিকর নয়, বরং এর মাধ্যমে রোজার মূল উদ্দেশ্য, যেমন আত্মসংযম ও আল্লাহর
প্রতি কৃতজ্ঞতা, ব্যাহত হয়। তাই ইফতার সময় খাবারের পরিমাণে সামঞ্জস্য রাখা
উচিত।
দ্বিতীয়ত, "ইফতার সময় অসাবধানভাবে কথা বলা বা ঝগড়া করা" পরিহার করা উচিত।
রোজা রাখা অবস্থায় মুসলিমদের উচিত তাদের আচরণ ও কথাবার্তায় বেশি সতর্ক থাকা।
ইফতার করার সময় দুনিয়াবি বিষয় নিয়ে তর্ক বা ঝগড়া করা এবং অযথা গিবত করা রোজার
মূল্য কমিয়ে দেয়। রাসুল (সা.) বলেছেন, "যে ব্যক্তি রোজা রাখার সময় মিথ্যা বলা
এবং অশ্লীল কাজ করা থেকে বিরত না থাকে, তার জন্য আল্লাহ কোনো প্রকার পুরস্কার
রাখেন না।" (বুখারি) তাই ইফতারের সময় নিজের মনোভাব এবং কথাবার্তা সৎ ও নির্মল
রাখা উচিত।
আমাদের শেষ কথা
আজকের সেহরির শেষ সময় রাজশাহী ও ইফতারের সময়সূচি এবং আবহাওয়ার তথ্যের উপর
ভিত্তি করে সঠিক প্রস্তুতি নেওয়া এবং রোজা পালন করা উচিত। সেহরি ও ইফতার সময়ের
সঠিকতা নিশ্চিত করতে স্থানীয় মসজিদ বা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নির্ভরযোগ্য উৎস
থেকে সময়সূচি যাচাই করা উচিত।রমজান মাস শুধু শারীরিক উপবাসের সময় নয়, এটি
আত্মিক উন্নতি ও আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের সেরা সুযোগ।
ইফতার করার সময় আমাদের উচিত সতর্কতা, সংযম ও আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রদর্শন
করা। সঠিকভাবে ইফতার করে, দোয়া পড়ে, সততা ও ধার্মিকতার সঙ্গে এই মাসের বরকত
গ্রহণ করা উচিত। ইফতারের সময় ছোট ছোট বিষয়গুলির মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি
অর্জন করতে হবে এবং আমাদের সবার উদ্দেশ্য হওয়া উচিত, রমজানের শেষ দিনেও আমাদের
কর্ম ও হৃদয় যেন বিশুদ্ধ থাকে, এবং আল্লাহ আমাদের সমস্ত দোয়া কবুল করে নেন।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে সঠিকভাবে রোজা পালনের তাওফিক দান করুন। আমিন।
আপনারা কীভাবে ইফতারের সময়টা উপভোগ করবের? ইফতার করার সময় কোন দোয়া বা সুন্নতটি
আপনার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ? মন্তব্যে আমাদের জানাতে ভুলবেন না ধন্যবাদ!
আপনার মতামত আমাদেরকে সাহায্য করবে আরো সুন্দরভাবে আপনাদের সেবা দেওয়ার জন্যে ।
comment url